যুগবার্তা ওয়েব ডেস্ক: উত্তরবঙ্গে প্রবল বৃষ্টি হবে, আগেই জানিয়েছিল আলিপুর আবহাওয়া দফতর। দার্জিলিঙে অতি ভারী বর্ষণের সতর্কতাও জারি করা হয়েছিল। শনিবার রাত থেকে শুরু হয় বৃষ্টি । এক রাতের বৃষ্টিতেই দার্জিলিঙের পরিস্থিতি ভয়াবহ। তিস্তার জল বেড়ে উঠে এসেছে জাতীয় সড়কে। তিস্তাবাজারের কাছে ২৯ মাইল ভালুখোলায় তিস্তার জল উঠে বন্ধ হয়ে গিয়েছে ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক। মিরিক এবং দুধিয়ার মাঝের লোহার সেতুর একাংশ বৃষ্টিতে ভেঙে গিয়ে অন্তত ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। সুখিয়ায় মারা গিয়েছেন চার জন। একাধিক রাস্তায় ধস নেমে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে। সিকিম এবং কালিম্পঙের সঙ্গে যোগাযোগ সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে। শিলিগুড়ি থেকে মিরিকের যোগাযোগ বন্ধ। এমনকি, দার্জিলিং শহরের সঙ্গেও যোগাযোগ বিঘ্নিত হয়েছে, যা সচরাচর দেখা যায় না। আটকে পড়েছেন বহু পর্যটক। চলছে উদ্ধারকাজ। আগামী কাল সোমবার পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে উত্তরবঙ্গ যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে খবর, দিলারামের কাছে রাস্তায় ধস নামার ফলে দার্জিলিঙে যাতায়াতের প্রধান সড়ক অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছে। এ ছাড়া, কালিম্পং এবং সিকিমের দিকে যাওয়ার রাস্তা সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে গিয়েছে। বিপদসীমার উপর দিয়ে একাধিক নদী বইছে। দুর্যোগে দিশাহারা বন্যপ্রাণীরা জঙ্গল থেকে গ্রামের দিকে চলে আসছে। দুটি হরিণ উদ্ধার করা হয়েছে।
জিটিএ-র তরফে দুর্যোগ নিয়ে একটি নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে রবিবার সকালে। সেখানে বলা হয়েছে, পর্যটকদের জন্য আপাতত রক গার্ডেন এবং টাইগার হিল বন্ধ। দুর্যোগে পর্যটকদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। মিরিক থেকে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (কার্শিয়াং) বলেন, ‘‘মিরিকে পাঁচটি মৃতদেহ ইতিমধ্যে আমরা উদ্ধার করেছি। দুটি দেহ আগে উদ্ধার করা হয়েছে। সুখিয়ায় আরও চার জনের মৃত্যুর কথা শুনেছি। উদ্ধারকাজ চলছে। তবে আবহাওয়ার কারণে খুব সমস্যা হচ্ছে। রোহিণীর রাস্তা পুরো বন্ধ। দিলারামের দিকটাও বন্ধ। মিরিকে যাঁরা আটকে আছেন, তাঁদের বার করার চেষ্টা করছি আমরা। বাসিন্দাদেরও উদ্ধার করা হচ্ছে।“ পরে মোট ১৩ জনের মৃত্যুর কথা নিশ্চিত করে পুলিশ। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। যে সব পর্যটক আটকে পড়েছেন বা কোনওরকম সহায়তার দরকার হলে দার্জিলিং পুলিশ কন্ট্রোল রুমের সঙ্গে +৯১ ৯১৪৭১ ৮৯০৭৮ নম্বরে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।
ছবি: সংশ্লিষ্ট সংস্থার সৌজন্যে