যুগবার্তা ওয়েব ডেস্ক: বানভাসি কলকাতায় কলেজ স্ট্রিটের অবস্থাও শোচনীয়। মঙ্গলবার চোখে পড়েছিল, জমা জলে ভেসে যাচ্ছে দামি দামি নতুন বই, পুজোবার্ষিকী, পত্রপত্রিকা। জলে প্রায় ডুবে আছে বইয়ের দোকানের কম্পিউটার, বই রাখার তাক। কলেজ স্ট্রিট অঞ্চলে বেশি বৃষ্টি হলেই রাস্তায় জল জমে যায়। অন্য সময় হলে বই প্লাস্টিকে মুড়ে অবস্থা সামাল দেওয়ার চেষ্টা করা হয়।কিন্তু সোমবার রাতে যে পরিমাণ বৃষ্টি হয়েছে, তাতে কিছু করার ছিল না বলে মত প্রকাশক ও বই বিক্রেতাদের। তাঁদের একাংশের দাবি, বই ভিজে যাওয়ায় তাঁদের কয়েক কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।
কলেজ স্ট্রিটের বই বিক্রেতা ও প্রকাশকেরা জানাচ্ছেন, ২০২০ সালে ঘূর্ণিঝড় আমপানে যা ক্ষতি হয়েছিল, সোমবার সারা রাতের তুমুল বৃষ্টি তার চেয়েও বেশি ক্ষতি হয়েছে তাঁদের। এক প্রকাশক বলেন, ‘‘সকালে দোকানে এসে দেখি, ভিতরে রাখা প্রায় সব বই-ই জমা জলে ভাসছে। তার মধ্যে আমার নিজস্ব প্রকাশনার বই যেমন রয়েছে, তেমনই রয়েছে অন্যান্য প্রকাশনার বই, পুজোসংখ্যা। কয়েক লক্ষ টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়ে গেল।‘ কলেজ স্ট্রিটের ফুটপাতের কয়েক জন বই বিক্রেতা জানালেন, রাতে বাড়ি ফেরার আগে বইপত্র সব প্লাস্টিকে মুড়ে রেখে যান তাঁরা। সোমবার রাতেও তা-ই করেছিলেন। কিন্তু সেই প্লাস্টিকও বইপত্র রক্ষা করতে পারেনি। সব বই ভিজে নষ্ট হয়ে গিয়েছে।
পাবলিশার্স অ্যান্ড বুক সেলার্স গিল্ডের কর্তা ত্রিদিব চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমার প্রায় ১০ থেকে ১২ লক্ষ টাকার বই নষ্ট হয়েছে। পুজোর মুখে আমাদের খুব বড় ক্ষতি হয়ে গেল।’গিল্ডের আর এক কর্তা সুধাংশুশেখর দে’র কথায়, ‘‘আমপানে ঝড় হয়েছিল বেশি। এ বার বৃষ্টি বেশি। গভীর রাতে বৃষ্টি নামায় কোনও ব্যবস্থাও নিতে পারিনি। সব থেকে বেশি ক্ষতি হয়েছে তাঁদের, যাঁরা ফুটপাতের ছোট ছোট স্টলে ব্যবসা করেন। এই বৃষ্টিতে তাঁদের প্রায় সব বই-খাতা নষ্ট হয়ে গিয়েছে।‘ প্রকাশকদের সমবেত আবেদন, যে সব বই ভিজে গিয়েছে, সেগুলি শুকিয়েও আগের অবস্থায় ফিরবে না। ফলে, সে সব বই পুরো দামে বিক্রি হবে না। ভেজা বই শুকিয়ে যাওয়ার পরে যদি সেগুলি পাঠযোগ্য থাকে, তা হলে পাঠকদের কম দামে কিনে নেওয়ার অনুরোধ করছেন তাঁরা।