যুগবার্তা ওয়েব ডেস্কঃ রোগ বড় বালাই! আর এখন তো নানা ধরনের অসুখে আক্রান্ত হয়ে পড়ছি আমরা, যা বছর ১০-১৫ আগেও ভাবা যেত না। তাই সতর্ক থাকতে হবে অনেক বেশি। যেমন ধরুন পায়ের পেশীতে টান ধরা। এরকম কমবেশি সকলেরই হয়। কিন্তু যদি মাঝেমধ্যেই পায়ের পেশীতে টান ধরে, হাঁটুর নীচ থেকে প্রচণ্ড যন্ত্রণা হচ্ছে, তা হলে সাবধান হতে হবে। পায়ে ব্যথা মানেই তা নিরীহ পেশীর যন্ত্রণা, এমনটা না-ও হতে পারে। পায়ের ব্যথা হার্টের রোগের লক্ষণও হতে পারে বলে দাবি গবেষকদের।
কাঁরা সাবধান হবেন?
মনে রাখতে হবে, পায়ে যন্ত্রণা হওয়ার মানে কিন্তু এই নয় যে, সমস্যা শুধু পায়েই সীমাবদ্ধ। দেহের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গেও এর রেশ পড়ে।
পেরিফেরাল আর্টারি ডিজিজে তাঁরাই বেশি আক্রান্ত হন, যাঁদের ডায়াবিটিস বা উচ্চ কোলেস্টেরল আছে। মানুষের শরীরে মূলত দু’ধরনের কোলেস্টেরল পাওয়া যায়- ‘হাই ডেনসিটি লাইপোপ্রোটিন’ (এইচ ডি এল) বা ভালো কোলেস্টেরল এবং ‘লো ডেনসিটি লাইপোপ্রোটিন’ (এল ডি এল) বা খারাপ
কোলেস্টেরল। রক্তে এল ডি এল-এর পরিমাণ বেড়ে গেলেই রক্ত চলাচলের স্বাভাবিক প্রক্রিয়া ব্যাহত হয়। রক্তে কোলেস্টেরলের স্বাভাবিক মাত্রা প্রতি ডেসিলিটারে ২০০ মিলিগ্রাম। এর বেশি হলেই সাধারণত বলা হয় কোলেস্টেরল বেড়েছে। চিকিৎসার পরিভাষায় একে বলে হাইপারকোলেস্টেরোলেমিয়া। এরকম হলে পায়ের পেশীতে টান ধরতে পারে, অসহ্য ব্যথাও হতে পারে। যদি কোলেস্টেরলের মাত্রা এর চেয়েও বেশি হয়, তখন রক্তে এত বেশি প্রোটিন ও ফ্যাট জমা হতে শুরু করে, যা রক্তজালিকাগুলিকে ছিঁড়ে দেয়। ফলে রক্তপ্রবাহ বাধা পায়। এর প্রভাব পড়ে হার্টেও। ‘পেরিফেরাল আর্টারি ডিজ়িজ়’ থেকে অনেক ক্ষেত্রেই ‘করোনারি আর্টারি ডিজ়িজ়’-র ঝুঁকি বাড়ে। এতে হার্টের ধমনীতে রক্তপ্রবাহ বাধা পায়, তখন হৃৎস্পন্দন অনিয়মিত হয়ে পড়ে যা হৃদ্রোগ ডেকে নিয়ে আসে।
কী বলছে গবেষণা?
হার্ভার্ড মেডিসিন স্কুলের গবেষণা বলছে, দেহের বিভিন্ন অঙ্গে অক্সিজেনসমৃদ্ধ রক্ত ছড়িয়ে পড়ে ধমনীর মধ্য দিয়ে। কোলেস্টেরলের পরিমাণ বেড়ে গেলে সেই ধমনীগুলির ভিতর স্নেহ পদার্থের আস্তরণ তৈরি হয়। ফলে রক্ত চলাচলের পথ রুদ্ধ হয়ে আসতে পারে। একে বিজ্ঞানের ভাষায় বলে ‘প্লাক’ তৈরি হওয়া। এই ধরনের প্লাক তৈরি হলে দেহের বিভিন্ন অঙ্গে রক্ত পৌঁছতে সমস্যা হয়। দেহের প্রান্তিক অঙ্গগুলির ধমনীতে তৈরি হওয়া এই সমস্যাকেই বলে ‘পেরিফেরাল আর্টারি ডিজ়িজ়’ বা ‘পিএডি’। রক্ত চলাচলে বিঘ্ন ঘটায় পায়ের শিরা ফুলে ওঠে, তখন প্রচণ্ড প্রদাহ হয়, ফলে পায়ে যন্ত্রণা শুরু হয়। এই ‘পিএডি’ অনেক ক্ষেত্রে হৃদ্রোগের সঙ্কেত বলে দাবি করছেন গবেষকরা।
ছবিঃ সংশ্লিষ্ট সংস্থার সৌজন্যে