যুগবার্তা ওয়েব ডেস্কঃ শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত অফিসে বসে একটানা কাজ করলে শরীরে নানারকম সমস্যা দেখা দিতে পারে। গুরুতর সমস্যা দেখা দিতে পারে চোখে। আনেকক্ষণ এসিতে কাজ করে চোখের বিপদ ডেকে আনতে পারেন নিজের অজান্তেই। কেন? চোখের পাতার গ্রন্থি থেকে জলীয় পদার্থ ক্ষরিত হয়। ক্ষরিত হয় স্নেহপদার্থও। দীর্ঘ সময় এসিতে থাকলে চোখের পাতায় থাকা এই লিপিড উৎপাদক গ্রন্থিগুলিও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। প্রভাব পরতে পারে অশ্রুগ্রন্থির উপরেও। চোখ চুলকাতে থাকে । এর কারণ, এসি নিয়ন্ত্রক যন্ত্র বাতাসের আর্দ্রতা শুষে নেয়। তাই বদ্ধ ঘরে দীর্ঘ সময় এসি চললে বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ অনেকটা কমে যেতে পারে। আর বাতাসের আর্দ্রতা কমে গেলে তার প্রভাব পড়ে চোখের উপর। চিকিৎসার ভাষায় একে বলে ‘ইভাপোরেটিভ ড্রাই আইজ’।
‘ড্রাই আইজ়’-এর সমস্যা হচ্ছে বুঝবেন কী করে? প্রত্যেক রোগের ক্ষেত্রেই কিছু না কিছু উপসর্গ থাকে। সেই লক্ষণ দেখেই প্রাথমিক সন্দেহ করতে হবে।
১) কোনও কারণ ছাড়াই যদি অনবরত চোখ দিয়ে জল পড়ে, তা ড্রাই আইজ়ের লক্ষণ হতে পারে। চোখ থেকে জল পড়ার অর্থ হল ‘টিয়ার ফিল্ম’ চোখকে আর্দ্র রাখতে পারছে না। তাই শুষ্ক চোখকে আর্দ্র রাখতে জল উৎপাদন করছে।
২) চোখে যখন জল কমে যায়, তখন বার বার পলক ফেলে নিজেকে রক্ষা করার চেষ্টা করে। ফলে চোখে একটা ক্লান্তি আসে। ফলে চোখে ব্যাথা হতে পারে । এটাও ড্রাই আইজ়ের লক্ষণ।
৩) মাঝেমধ্যে চোখের সামনের দৃষ্টি যদি ঝাপসা হয়ে আসে, তাহলে সাবধান হতে হবে। এই লক্ষণগুলি বেশ কয়েকদিন ধরে নজরে এলেই ডাক্তারবাবুর পরামর্শ নিতে হবে।
‘ড্রাই আইজ়’-এর আক্রমণ থেকে বাঁচতে কী সাবধানতা অবলম্বন করবেন?
১) যারা দীর্ঘ সময় ধরে কম্পিউটারে কাজ করেন তারা এই ধরনের চোখের সমস্যায় ভোগেন। কাজ করার সময় আমাদের চোখ থাকে কম্পিউটার স্ক্রিনে। অফিসে একটানা কাজ না করে মাঝে মাঝে ব্রেক নিন। তাতে পিঠ বা ব্যাক পোরশনের একটু রিলিফ হয়। বিশ্রাম পায় চোখ। ২) চোখের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে বেশি করে জল খান। ভাবছেন তো, যে জল খেলে চোখ কীভাবে ভালো থাকবে? জল শরীরকে আর্দ্র রাখে। যাদের সেভাবে জল খাওয়ার অভ্যাস নেই, তারা অন্য তরল পদার্থ (চা, লেবুর শরবৎ খেতে পারেন)। শসা, তরমুজের মতো জলজুক্ত ফল খেলে অনেকটা উপকার দেয়।
(৩) চোখ সব সময়ে পরিষ্কার রাখা প্রয়োজন। ধুলো থেকেও সংক্রমণ ছড়ায়। চোখের পাতায় কোনও ধুলোবালি জমতে দেওয়া চলবে না। সেই কারণে চোখে-মুখে জল দেওয়ার আগে ভালো করে ত্বক পরিষ্কার করে নিতে হবে। ঘণ্টায় ঘণ্টায় চোখে জলের ঝাপটা দেওয়ার অভ্যাসটাও ভালো নয়। (৪) তবে শুধু ঠাণ্ডা জল নয়, মাঝে মধ্যে গরম ভাব দিতে পারেন। কাপড়ে করে গরম সেঁক দিতে পারলে চোখের ক্লান্তি কিছুটা কমবে। ৫) আর যারা কনট্যাক্ট লেন্স ব্যবহার করেন তাঁদের একটা কোথা মাথায় রাখতে হবে। সবসময় লেন্স পরে থাকলে ড্রাই আইজের সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই দিনে ১০-১২ ঘণ্টার বেশি লেন্স না পরাই ভালো।
ছবিঃ সংশ্লিষ্ট সংস্থার সৌজন্যে