শব্দবাজি নিয়ে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল হাইকোর্ট(High Court) ও সুপ্রিম কোর্ট(Supreme Coourt)। বাজি পোড়ানোর সময়ও নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সবকিছু নির্দেশকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে সোমবার কালীপুজোর রাতে শব্দবাজি দৌরাত্ম চরমে উঠল। আদালতের নির্দেশ বা পুলিশের চোখরাঙানি উপেক্ষা করে কলকাতার শহর ও তার আশেপাশে দেদার ফেটেছে শব্দবাজি। তবে কলকাতার পুলিশ কমিশনার (Commissioner of Police) মনোজ ভর্মার (Manoj Verma) দাবি, গত বছরের তুলনায় এবারের পরিস্থিতি অনেক ভালো। দেশের অন্যান্য শহরের দূষণের থেকেও অনেকটাই কম কলকাতার দূষণ।
পুলিশ কমিশনার যেমনটা দাবি করছেন, কলকাতা ও শহরতলীর আশেপাশের পরিস্থিতি একেবারেই সেরকম ছিল না। সন্ধ্যে হতেই দেদার ফাটা শুরু হয়েছে শব্দবাজি। রাত যত বেড়েছে, বাজি ফাটা ও বেড়েছে পাল্লা দিয়ে। দমদম থেকে নিউ টাউন, যাদবপুর থেকে পার্ক স্ট্রিট, গড়িয়া থেকে বেহালা চিত্রটা ছিল একইরকম। কোথাও কালিপটকা জাতীয় বাজি ফাটানো হচ্ছিল একটানা। আবার কোথাও রাস্তার মাঝখানে তুবড়ি চড়কি চকলেট বোম ফাটিয়ে চলছিল ‘শুভ দীপাবলি’ উদযাপন। বেহালার বেশ কিছু অঞ্চলে উড়তে দেখা যায় ফানুষও। রাত আটটা থেকে দশটা পর্যন্ত সবুজ বাজি ছাড়া অন্য কোনও বাজি পোড়ানোয় নিষেধাজ্ঞা থাকলেও, বেশিরভাগ অঞ্চলেই রাত দুটো তিনটে পর্যন্ত শব্দবাজি ফাটানোর অভিযোগ উঠেছে। চলন্ত ট্রেন লক্ষ্য করে অনেক জায়গায় ছোড়া হয়েছে বাজি। ভয় সিটিয়ে থেকেছেন যাত্রীরা। বাঁশদ্রোণী এলাকায় শব্দবাজির ভয়ে পালিয়ে একটি কুকুর মেট্রোরেলের কামরায় উঠে পড়ে। বিস্তর অসুবিধে হয়েছে শিশু, বৃদ্ধ থেকে অসুস্থ মানুষজনের। পুলিশ অভিযান চালিয়ে শহর জুড়ে ৮৫১.৪৫ কেজি বেআইনি বাজি বাজেয়াপ্ত করেছে।
সোমবার রাত বারোটা পর্যন্ত দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের কাছে ৪১টি অভিযোগ জমা পড়ে। অন্যদিকে পুলিশ সূত্রে খবর, সোমবার রাত বারোটা পর্যন্ত তাদের কাছেও জমা পড়েছে শব্দবাজি সংক্রান্ত একশরও বেশি অভিযোগ। গ্রেফতার হয়েছেন কমপক্ষে ১৮৩ জন। ট্রাফিক আইন ভেঙে পুলিশের জালে ধরা পড়েছেন ৮৮২ জন। হেলমেট ছাড়া বাইক চালিয়ে আটক হয়েছেন ৫১৪ জন। বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানোর ঘটনা ঘটেছে ১১৬ টি। জুয়া খেলতে গিয়ে ধরা পড়েছেন ৬ জন। মত্ত অবস্থায় গাড়ি চালিয়ে ৯৯ জন এবং অন্যান্য নানা অপরাধে আরো ১৫৬ জনকে জরিমানা করা হয়েছে।
এত কিছু সত্বেও পুলিশের দাবি, ভারতের অন্যান্য বড় শহরের তুলনায় কলকাতার দূষণের মাত্রা অনেক কম ছিল। মঙ্গলবার সকালে মনোজ ভার্মা দাবি করেন, শব্দ ৯০ ডেসিবল মাত্রা অতিক্রম করেনি, যেখানে নির্দিষ্ট মাত্রা ছিল ১২৫ ডেসিবল। এছাড়া বায়ু দূষণের উপরেও নজর রাখা হয়েছিল।
































