যুগবার্তা ওয়েব ডেস্ক: কলকাতা মেট্রোর (Metro) দুঃসময় যেন কাটতেই চাইছে না। ভিড়ের চাপে মেট্রো বন্ধ, চলাচলে দেরি, দরজা বন্ধ না হওয়া এসবকেও ছাপিয়ে গেল শুক্রবারের ঘটনা। ভর দুপুরে দক্ষিণেশ্বর (Dakshineswar) মেট্রো স্টেশনে খুন হয়ে গেল এক ছাত্র। অভিযোগ উঠল তারই বন্ধুর বিরুদ্ধে। দু’দল ছাত্রের মধ্যে বচসা শেষপর্যন্ত গড়ায় হাতাহাতিতে। সেই ঝামেলার মধ্যেই এক ছাত্রকে ছুরি দিয়ে কোপায় তার বন্ধু, এমনই অভিযোগ। আহত ছাত্রকে তড়িঘড়ি বরাহনগর স্টেট হাসপাতালে (Baranagar State Hospital) নিয়ে যাওয়া হয়। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সেখানেই তার মৃত্যু হয়। মৃতের বাড়ি আলমবাজারে। এই ঘটনায় একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। কিন্তু কারা এই কাণ্ড ঘটালেন, তা এখনও স্পষ্ট নয়। পুলিশ সূত্রে খবর, মেট্রো স্টেশনের সিসি টিভির ফুটেজ খতিয়ে দেখে ওই তরুণদের সম্পর্কে জানার চেষ্টা চলছে। জানা গিয়েছে, শুক্রবার দুপুর আড়াইটে নাগাদ দক্ষিণেশ্বর (Dakshineswar) মেট্রো স্টেশনে ঘটনাটি ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শীদের কথায়, ‘‘মেট্রো করেই ওই ছাত্রের দল দক্ষিণেশ্বর আসে। স্টেশন থেকে বাইরে যাওয়ার আগে তাদের মধ্যে কোনও কারণে ঝামেলা শুরু হয়। প্রথমে তর্কাতর্কি, উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়ে হাতাহাতি বাধে। বচসার মধ্যেই এক যুবক ছুরি দিয়ে অন্য এক জনের উপর হামলা করে। সঙ্গে সঙ্গে রক্ত ছড়িয়ে পড়ে চারপাশে।’’ এরপর বন্ধুবান্ধদের দলে থাকা অন্যান্যরা মেট্রো স্টেশন থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ুয়াকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। তবে শেষরক্ষা হয়নি। মৃত্যু হয় স্কুলপড়ুয়ার।
দিনে দুপুরে এই ঘটনার কথা ছড়িয়ে পড়তেই আতঙ্কিত হয়ে পড়েন যাত্রীরা। প্রশ্ন উঠতে শুরু করে মেট্রোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েও। কী ভাবে ব্যাগে ছুরি নিয়ে মেট্রোতে উঠল অভিযুক্ত ছাত্র? কেন মেট্রো স্টেশনে ঢোকার আগে পরীক্ষা করা হল না ওই ছাত্রের ব্যাগ? সঙ্গত প্রশ্ন তুলেছেন যাত্রীদের অনেকেই।
মেট্রো কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়েছে, মেট্রো স্টেশনের ‘নন-টিকিটিং’ এলাকায় রক্তের দাগ দেখা যায়। ঘটনা নজরে আসতেই খবর দেওয়া হয় পুলিশকে। মাস খানেক আগে ধর্মতলা এবং পার্ক স্ট্রিটের মধ্যে মেট্রোরেলের সুড়ঙ্গের মধ্যে এক যুবকের দগ্ধ দেহ উদ্ধার হয়েছিল। কী ভাবে ওই যুবক রাতে সকলের নজরে আড়ালে সুড়ঙ্গের মধ্যে পৌঁছোছিলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। এ বার মেট্রো স্টেশনে প্রকাশ্যে ছুরি দিয়ে কুপিয়ে খুনের ঘটনা প্রকাশ্যে এল। কলকাতা মোট্রোর ইতিহাসে আগে কখনও এমন ঘটনা ঘটেছে কি না, তা মনে করতে পারছেন না কেউ।
ছবি: সংশ্লিষ্ট সংস্থার সৌজন্যে