যুগবার্তা ওয়েব ডেস্ক: ভারত (India)-পাকিস্তান (Pakistan) ক্রিকেট মানেই বাড়তি উন্মাদনা। এশিয়া কাপের (asia Cup) ম্যাচ ঘিরে এ বার সীমান্তে দু’পারে উন্মাদনার থেকে বেশি রয়েছে উত্তেজনা। অপারেশন সিঁদুরের (Operation Sindoor) পর প্রথমবার আজ রবিবার রাতে ২২ গজে মুখোমুখি হচ্ছে দু’দেশ। এশিয়া কাপের সুপার ফোরের যোগ্যতা অর্জন নিয়ে দু’দেশের ক্রিকেটপ্রমীরাই এক রকম নিশ্চিত। গ্রুপের অন্য দু’দল ওমান (Oman) এবং সংযুক্ত আরব আমিরশাহি (United Arab Emirates)। তবু এই ম্যাচে জয় ছাড়া অন্য কিছু ভাবার সুযোগ নেই সূর্যকুমার যাদব (Suryakumar Yadav) এবং সলমন আঘাদের (Salman Ali Agha)। এই ম্যাচ ক্রিকেট ছাড়িয়ে অনেক বেশি মর্যাদার লড়াই। জাত্যভিমানের লড়াই। খাতায়-কলমে ক্রিকেটীয় দক্ষতা বা শক্তিতে খানিকটা এগিয়ে সূর্যকুমারেরা। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ভারত এখন বিশ্বচ্যাম্পিয়ন (World Champion) । ২০ ওভারের ক্রিকেটে অবশ্য কোনও দলকে হেলাফেলা করা যায় না। পাকিস্তানকে তো নয়ই। নিজেদের দিনে যে কোনও দলকে হারাতে পারেন আঘারা। তার উপর ভারত-পাকিস্তান ম্যাচে খাতা-কলমের হিসাব চলে না কোনও দিনই।
প্রতিযোগিতার প্রথম ম্যাচে ওমানকে দাপটের সঙ্গে হারিয়েছে পাকিস্তান। আমিরশাহির বিরুদ্ধে আরও দাপুটে জয় পেয়েছে ভারত। পাকিস্তানের ব্যাটিং নিয়ে প্রশ্ন তোলার সুযোগ থাকলেও ভারতের পারফরম্যান্স ছিল প্রায় নিখুঁত। ভারতীয় দলের সকলে ফর্মে রয়েছেন। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে মুখোমুখি লড়াইয়েও ১০-৩ ব্যবধানে এগিয়ে ভারত। তবু ক্রিকেটপ্রেমীদের আকর্ষণের একাধিক দ্বৈরথের সম্ভাবনা রয়েছে। লড়াই মূলত পাকিস্তানের বোলিংয়ের সঙ্গে ভারতীয় ব্যাটিংয়ের। অভিষেক শর্মা-শুভমন গিল জুটিকে শুরুতেই সামলাতে হবে শাহিন আফ্রিদির বল। মিডল অর্ডারে সূর্যকুমারের সঙ্গে লড়াই পাকিস্তানের বাঁ হাতি স্পিনার সুফিয়ান মুকিমের। আবার জসপ্রীত বুমরাহ, কুলদীপ যাদবদের সামলাতে হবে সাইম আয়ুব, মহম্মদ হ্যারিসদের চ্যালেঞ্জ। লড়াই কঠিন। ভারতীয় দলের বেশ কয়েক জন নিজের দিনে একাই ম্যাচ বের করে নিতে পারেন। পাক দলেও একাধিক তেমন ক্রিকেটার রয়েছেন। ভারত আবার দীর্ঘ দিন পর টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট খেলছে। পাকিস্তান এশিয়া কাপের আগে প্রস্তুতি হিসাবে খেলেছে ত্রিদেশীয় টি-টোয়েন্টি সিরিজ়। চ্যাম্পিয়নও হয়েছে আফগানিস্তানের মতো দলকে হারিয়ে। তার উপর আমিরশাহি অনেকটাই পাকিস্তানের ঘরের মাঠের মতো। একটা সময় পাকিস্তান হোম সিরিজ় খেলত আমিরশাহিতে। সেই অভিজ্ঞতা আঘাদের কিছুটা সাহায্য করতে পারে বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের বিরুদ্ধে।
টান টান লড়াইয়ের সব সম্ভাবনাই রয়েছে। সেই লড়াইয়ের উত্তেজনা বৃদ্ধি করতে পারে অপারেশন সিঁদুরের পর তলানিতে ঠেকা দু’দেশের সম্পর্ক। প্রতিযোগিতা শুরুর আগে অধিনায়কদের সাংবাদিক বৈঠকেও ঝুঁকি নেননি আয়োজকেরা। সূর্যকুমার এবং আঘার মাঝে বসানো হয় রশিদ খানকে। সূর্যকুমার এবং আঘাকে সেই অনুষ্ঠানে করমর্দন করতে বা সরাসরি কথা বলতে দেখা যায়নি। কেউ কারও দিকে সে ভাবে তাকাননিও। উত্তেজনার আঁচ পাওয়া গিয়েছে সে দিনই।
একটা সময় এশিয়া কাপ নিয়েই অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছিল। সিদ্ধান্ত নিতে পারছিলেন না ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিসিআই) কর্তারা। পরে কেন্দ্রীয় সরকার অবস্থান স্পষ্ট করায় পরিস্থিতি আপাত সহজ হয়েছে। আগের মতোই দ্বিপাক্ষিক সিরিজ় এবং ভারতীয় দলের পাকিস্তান সফরে নিষেধাজ্ঞা জারি রয়েছে। তবে নিরপেক্ষ দেশে বহুদলীয় প্রতিযোগিতায় মুখোমুখি হতে বাধা নেই। গত চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সময় ভারতের অবস্থানের বিরোধিতা করে এ দেশে দল না পাঠানোর সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেয় পাকিস্তানও। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট সংস্থা (আইসিসি) পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) সেই দাবি মেনে নিয়েছে। তাই এ বারের প্রতিযোগিতা ভারতের পরিবর্তে হচ্ছে আমিরশাহিতে।
ছবি: সংশ্লিষ্ট সংস্থার সৌজন্যে